সবার ঈদ এক না
সবার ঈদ এক না
যে মানুষ ঈদে বাড়ি ফিরবে বলে কথা দিয়ে লাশ হয়ে ফিরলো।
তার পরিবারের ঈদ কি আনন্দের?
তার মা কি ঈদের দিন ফিরনি-জর্দা-সেমাই রাঁধবে?
তার ছেলে-পুলে কি নতুন কাপড় পরবে?
যে শ্রমিক মজুরি না পেয়ে হতাশ হয়ে আকাশে তাকিয়ে আল্লাহকে সাক্ষী রাখছে।
সেই ঈদের আনন্দ তো চাপা চোখের আনন্দে মিশে আছে।
তার ছেলে-মেয়ের সেই আনন্দের অপেক্ষা কি ফুরাবে?
যার বাবা হাসপাতালে অক্সিজেন লাগিয়ে শয্যাশায়ী।
বাবার দেখাশোনায় যার ঈদের চাঁদ রাত্রি কাটবে হাসপাতালের বারান্দায় ফ্লোরে শুয়ে।
তাকে কি খুব সুখের ঈদ মোবারক বলা যায়?
বিনা দোষে যে মানুষ পুলিশ কাস্টডিতে বন্দি আছে,
বিনা বিচারে হাজতবাসে ধুকছে দিনের পর দিন।
তাকে কি ঈদের শুভেচ্ছা বার্তা কার্ড কি দেয়া যায়?
যে রিক্সা চালক করিম মিয়া যার টিনের ঘর আপনার আট তলা জানালা দিয়ে দেখা যায়।
ওই জানালা দিয়ে আপনার ছেলের ফেলা চিপসের প্যাকেট জোড়া দিয়ে দিয়ে যার ছেলে ঘুড়ি বানায়।
সেই ছেলের সাথে কি আপনার ছেলে কখনো ঈদের কোলাকুলি করবে?
যে প্রবাসী ভাই ঈদের দিনও কাজ থেকে ফিরে খালি গায়ে ফ্লোরে শুয়ে বাড়িতে ইমুতে কল দিয়ে জিজ্ঞাসা করে তোমরা কি ঈদের জন্য কিছু কিনেছ?
সেই প্রবাসী ভাইয়ের ঈদ আর আমাদের ব্যান্ডের দামী পাঞ্জাবি পড়া ঈদ দু’টি কি এক?
আবার ধরেন, যে সারা রমজান নামাজ-রোযার ধার ধারল না।
ঈদের দিনের সেমাই-ফিরনির সেই সমান স্বাদ কি সে পাবে,
যে পুরো মাস না খেয়ে কষ্ট করে ঈদের আনন্দের অপেক্ষা করেছে?
আবার ওই ফিলিস্তিনি শিশুর কথায় ধরেন,
যে বেলুনের পরিবর্তে ইসরায়েলিদের ছোড়া গুলির খোসা নিয়ে খেলছে!
সিজদারত সেই ফিলিস্তিনি ভাই, যে তিনবার “সুবহানা-রাব্বিয়াল-আলা” পড়ে শেষ করতে পারবে কিনা নিশ্চিত নয়।
সেই বাবা, যে রুকু থেকে মাথা তুলে আকাশ দেখবে নাকি তার আগেই মাথায় গুলি লেগে লাশ হবে।
সেই মা, যার ছেলেকে নতুন কাপড়ের পরিবর্তে সাদা কাপড় পড়ানো হবে।
তাদেরকে ঈদের আনন্দের কথা জিজ্ঞাসা করাই তো এক প্রকারের অমানবিকতা!