The Boy in the Striped Pajamas
পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসীও একটি পরিবার আছে। সেও তার পরিবার এবং তার স্ত্রী-সন্তানদের ভালোবাসে। যার এক নির্দেশে বোমার আঘাতে শতশত মায়ের কোল খালি হলেও সে আবার পরম যতনে তার শিশুকে কোলে তুলে নেয়। যার এক রকেটলঞ্চারের আঘাতে শতশত ঘরবাড়ি পুড়ে ছাই হলেও সে নিক্ষেপকারীও সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে।
কোন এক বন্ধুর সাজেশনে ছবিটা দেখেছি আজ থেকে দশ বছর আগে। কিন্তু আজ পর্যন্ত ছবিটার প্রতিটা দৃশ্যপট মনে আছে। শক্ত বুড়ো অনুভূতিকে বারবার প্রশ্নের সম্মুখীন করেছে। বিবেকের কাঠগড়ায় নিজেকে আসামি করেছে। ছোট্ট দুই শিশুই বুঝিয়ে দিয়েছে বন্ধুত্ব কি জিনিস। বন্ধু বন্ধুর জন্য কি না করতে পারে? বন্ধুত্ব রক্ষার এবং বন্ধুর বিপদে পাশে দাঁড়ানোর কি নিদারুণ নিদর্শনই দুই বন্ধু দেখালো…।
যে মন বন্ধুর জন্য কাঁদে না, সে কি আধো বন্ধু? বন্ধু তো সেই যে শত বিপদেই বন্ধুর হাত ধরে থাকবে।
একটা শিশু কোন জাত বুঝে না, উঁচু-নিচু, ধনি-গরিব ভেদাভেদ বুঝে না। শিশুদের আপন একটা দুনিয়া থাকে, হৈ-হুল্লোড় সহ অগোছালো একটা খেলার দুনিয়া আর কিছু বন্ধু।
একটা ছবি দেখার পর এতদিন ধরে দৃশ্য ভয়ে বেড়ানোর যা যা কারণ থাকতে পারে তার শতভাগ ওই ছবিতে ছিলো। ছোট্ট একটা গল্প দিয়ে কি সাংঘাতিক জিনিসই না বুঝিয়ে দিলো!
ছোট আট বছরের শিশু ব্রুনো। ব্রুনোর বাবা হলেন হিটলার বাহিনীর উচ্চপদস্থ একজন নাৎসি কর্মকর্তা। তার বাবা নতুন জায়গায় বদলি হওয়ার পর ব্রনোর একজন নতুন বন্ধু হয় তার নাম শ্মুয়েল। এই দুইজনই হলেন এক ছবির দুই নায়ক।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পটভূমিতে নির্মিত এটি একটি যুদ্ধ বিষয়ক ছবি হলেও কোন রক্তপাত আর হত্যার দৃশ্য দেখানো ছাড়া একটা ছবিতে যে একটা যুদ্ধের পুরো ভয়াবহ চিত্র ফুটিয়ে তোলা সম্ভব সেটা এই ছবি না দেখলে বিশ্বাস হতো না।
এত ইশারা-ইঙ্গিতে কথা বলার কারণ একটাই যাতে আমি কি বুঝাতে চাচ্ছি আপনারা তা বুঝতে না পারেন। যা আপনাদেরকে দেখে বুঝতে হবে। এইটা কোন লারেলাপ্পা টাইপের ছবি না যে, আপনি আরাম করে আয়েশি ভঙ্গিতে দেখবেন। ছবিটির দৃশ্যপট অত্যন্ত সাধারণ এবং সাদাসিধে টাইপের। কোন জটিল ব্যাপার-স্যাপার নাই। আপনাকে দেখতে বসতে হবে শান্ত-সরল মন এবং ভালো মুড নিয়ে।
হঠাৎ আকাশে কালো মেঘে ছেয়ে গেছে। মেঘের গর্জনে বৃষ্টি আসবে আসবে ভাব। বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে যাবে হয়তো কত পাপ, কত কালো অতীত! এমন এক বাদল দিনে…
এক ছেলে খুঁজছে বাবাকে
আর বাবা খুঁজছে ছেলেকে!
ব্রুনো… ব্রুনো…!
সমাপ্ত!
সমাপ্তের পরের কথা…
চেঙ্গিস খান ছিলেন দুনিয়ার সর্বকালের সবচেয়ে নৃশংস শাসক। মঙ্গোলিয়ান সাম্রাজ্যের এই কুখ্যাত শাসক হত্যা করেছেন প্রায় চার থেকে পাঁচ কোটি মানুষ। যা ছিলো তৎকালীন পৃথিবীর জনসংখ্যার ১১ শতাংশ।
এবং
হিটলারের নাৎসি বাহিনী হত্যা করেছিল প্রায় ৬০ লাখ ইহুদিকে।
বর্তমানে সেই ইহুদিরা জুলুম-নির্যাতন, বোমা বর্ষণে প্রতিনিয়ত মারছেন ফিলিস্তিনদের!
রিভিউ-লেখা: রাশেদুল হায়দার
Leave a Reply