বই: অ্যান্টিডোট
‘অ্যান্টিডোট’ নামটি প্রথমে একটু দুর্বোধ্য মনে হয়েছিলো। বইটিতে কি না কি আছে অজানা এক আশা নিয়ে বইটি পড়া শুরু করেছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ! লেখক সে আশাকে ষোলকলায় পূর্ণ করেছেন। বাংলা একাডেমি অনুযায়ী ‘অ্যান্টিডোট’ এর অর্থ – ‘বিষ বা রোগ প্রতিষেধক ঔষধ’। বইটি পড়ার পরেই কেবল বুঝতে পেরেছিলাম এই নামের সার্থকতা।
নাস্তিক্যবাদরা নাস্তিক বিষয়ক চিন্তাধারায় ব্রেনওয়াশ। আপনাকে আমাকেও ঈমান-আকিদায় ব্রেনওয়াশ হতে হবে। মানিও আবার সন্দেহও আছে এমন বিশ্বাসের স্থান আল্লাহর কাছে নাই।
লা-রইবা ফি – সন্দেহের কোন অবকাশ নাই, এমন বিশ্বাসই কেবল ঈমানি বিশ্বাস। আপনার ঈমানের ব্রেনওয়াশের জন্য এই বই কাজে দিবে। যাতে আপনি যা বিশ্বাস করেন “ইয়েস! আমি এই বিশ্বাসের বিশ্বাসী” এই টাইপের হওয়ার জন্য বইটিকে রেফারেন্স হিসেবে রাখুন।
আপনি আমি তো আর গবেষণা করে কুরআন থেকে এমন তথ্য বের করে আনতে পারবো না, তাই জীবন সার্থক এমন কষ্টের একটি বই আপনি আমি একটু কষ্ট করে হলেও পড়া উচিত।
বইটি আমার অনুভূতিতে আঘাত করেছে। এই আঘাত খারাপ আঘাত না। বেহুশ হয়ে গেলে আবার মাথায় বাড়ি মেরে হুশ ফিরানোর মত ভালো আঘাত। ঘুমন্ত, ঝিমন্ত আর অলস অনুভূতিকে জাগ্রত করার আঘাত।
মানুষের শরীরের আকার-আকৃতি এবং এর কার্যপ্রণালী ভীষণ রকমের এক জটিল এবং অদ্ভুত প্রকৃতির কাজ। এক ফোঁটা নুতফাহ (এর অর্থ এই বই অনুযায়ী- শুক্রাণু ও ডিম্বাণু) থেকে একজন মানুষ হয়ে উঠা থেকে শুরু করে এর প্রতিটা স্টেজের কাজ এবং গঠনপ্রণালী আশ্চর্য রকমের সুন্দর।
এই বইটি শুধু গল্পের মত শুয়ে-বসে পড়ার মতো কোন বই না। লেখক একথা বইয়ের শুরুতেই বলে দিয়েছেন। আমি শুয়ে শুয়ে পড়তে গিয়ে এই কথা পড়ে তারপর বসে গুরুত্ব দিয়ে বইটি পড়তে শুরু করেছিলাম। লেখকের গবেষণালব্ধ এই বই। যা প্রতিটা টপিকের রেফারেন্স দেখলে বুঝা যায়।
যদিও বইটিতে মেডিক্যাল টার্ম বেশি ব্যবহার করা হয়েছে তারপরেও সাধারণ যে কেউ আশা করি বুঝতে তেমন কোন অসুবিধে হবে না। মেডিক্যাল সায়েন্স নিয়ে আলোচনা বেশি। যেমন, মানুষের মায়ের পেটে বেড়ে উঠা। একটি মানব ভ্রূণ কিভাবে বেড়ে উঠে বর্তমান বিজ্ঞানের সাথে কোরআনের দরুন একটা মিল করে দিয়েছেন লেখক। নরমালি দেখলে আমি-আপনি সে মিল খুঁজে পাওয়া পাবো না।
আমার মনে হচ্ছে বইটি বায়োলজির স্টুডেন্টদের এবং যারা এনাটমি বিষয়ক পড়াশুনা করেন তাদের জন্য অবশ্য পাঠ্য হওয়া উচিত।
এই রকম বিশ্বাসের উপর লেখা এখন পর্যন্ত আমার পড়া যেসব বইও আপনাদের অবশ্য পাঠ্য হওয়া উচিত। তো একটি একটি করে ফেলুন এই বই সহ সবগুলো।
- প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ (আরিফ আজাদ)
- আরজ আলী সমীপে (আরিফ আজাদ)
- কষ্টিপাথর – ডা. শামসুল আরেফীন (বর্তমানে পড়ছি)
- ডাবল স্ট্যান্ডার্ড – ডা. শামসুল আরেফীন
- পড়ো – ওমর আল জাবির
আপনাদের পড়া বইগুলোর সাজেশনও আমাকে জানাবেন, প্লিজ।
ধন্যবাদ।
বই লেখক: আশরাফুল আলম সাকিফ
রিভিউ লেখা: রাশেদুল হায়দার
২৯ মার্চ, ২০২১